মঙ্গলবার ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ - ০৫:১৫
বাংলাদেশে ‘আঞ্জুমানে কুররা’-এর আয়োজনে অংশ নিলেন ইরানি ক্বারী ও হাফেজরা

বাংলাদেশের ‘আঞ্জুমানে কুররা’–এর উদ্যোগে বিভিন্ন কুরআনি মাহফিল আয়োজন এবং চতুর্থ আন্তর্জাতিক হিফজ ও কিরাআত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার বায়তুল মুকাররম মসজিদে এই কর্মসূচির সূচনা হয় এবং ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরে কুরআনি মাহফিল আয়োজনের মাধ্যমে তা অব্যাহত থাকে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ১০ দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক কুরআনি আয়োজনে বাংলাদেশ আঞ্জুমানে কুররা’র তত্ত্বাবধানে ইরান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, আলজেরিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ক্বারি ও হাফেজরা অংশগ্রহণ করেন।

ইরানের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর দপ্তর এবং সংস্কৃতি ও যোগাযোগ সংস্থার আন্তর্জাতিক কুরআন ও দাওয়াহ কেন্দ্রের সমন্বয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে ইরানের পক্ষ থেকে ইসহাক আবদুল্লাহি (কিরাআত—তাহকিক বিভাগ) এবং মেহেদি বারান্দে (পূর্ণ কুরআন হিফজ বিভাগ) অংশ নেন।

ঢাকার বায়তুল মুকাররম মসজিদে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মাদি এবং বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম খান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আয়োজক দেশ ও অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের প্রতিনিধিত্ব করে বক্তব্য প্রদান করেন।

ইরানের সাংস্কৃতিক কাউন্সিলর তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সময়ে মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামী বিশ্ব শত্রুদের সৃষ্ট নানাবিধ সংকট ও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এসব সংকট থেকে মুক্তির একমাত্র কার্যকর পথ হলো কুরআনের জীবনঘনিষ্ঠ নির্দেশনার যথাযথ অনুধাবন ও বাস্তব প্রয়োগ।

বাংলাদেশে ‘আঞ্জুমানে কুররা’-এর আয়োজনে অংশ নিলেন ইরানি ক্বারী ও হাফেজরা

তিনি আরও বলেন, মুসলমানদের প্রথম দায়িত্ব হলো কুরআনকে সঠিকভাবে বোঝা এবং এরপর তা ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে বাস্তবায়ন করা। তবেই উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ সুগম হবে এবং শত্রু ও তাদের সৃষ্ট সমস্যার ওপর বিজয় অর্জন সম্ভব হবে।

কিরাআত (তাহকিক) প্রতিযোগিতায় ইরানের প্রতিনিধি ইসহাক আবদুল্লাহি দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। এ বিভাগে ইন্দোনেশিয়ার ক্বারি প্রথম এবং মিসরের ক্বারি তৃতীয় স্থান অধিকার করেন।

পূর্ণ কুরআন হিফজ প্রতিযোগিতায় ইরানের প্রতিনিধি মেহেদি বারান্দে চতুর্থ স্থান লাভ করেন। এ বিভাগে ভারত ও বাংলাদেশের হাফেজরা প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কুরআনি কর্মসূচিগুলোতে সাধারণত কুরআনি মাহফিল আয়োজনই প্রধান গুরুত্ব পায় এবং প্রতিযোগিতা অংশটি গৌণ বিবেচিত হয়। এই আয়োজনেও মূলত কুরআনি মাহফিলের ওপরই বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ইরানের প্রতিনিধিদ্বয় ইসহাক আবদুল্লাহি ও মেহেদি বারান্দে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলায় অনুষ্ঠিত কুরআনি মাহফিলে তাঁদের তেলাওয়াত ও পরিবেশনার মাধ্যমে গভীর প্রভাব ফেলেন এবং বাংলাদেশি শ্রোতা ও অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন।

সবশেষে, এই আন্তর্জাতিক কুরআনি আয়োজনের সমাপনী অনুষ্ঠানে আয়োজক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণকারী ক্বারি ও হাফেজদের নগদ পুরস্কার প্রদান করা হয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha